কালো ঘোড়ার প্রান


রামপ্রসাদের “দোষ কারোও নয়গো মা” অনেকের মতন আমার প্রীয় গানের তালিকায় আছে। যদিও শেষ কবে নিজে চালিয়েছি, মনে করতে পারছিনা। তবুও খুব প্রীয়। যখন ব্যাংক, অফিস বা অন্য কোথাও নাজেহাল অবস্থায় পরি, চোখ বুজে দীর্ঘশ্বাস ছাড়ি আর মনে মনে গান গাই। “দোষ কারোও নয়গো মা.........” তবুও হাল ছাড়িনা। কার্য সিদ্ধির জন্য নাম গান করার প্রথা আমাদের রক্তে আছে। সেই কারনেই হয়তো এই বঙ্গের সরকারি অফিসের ওয়ার্ক কালচারের সমালচনা করলেও, অফিসে নিজের কাজের জন্য গেলে দাঁত বের করে হেঁ হেঁ করি।
দোষ সত্যিই কারো নয়। সুধুমাত্র আমার নিজের। আমি আমাদের সমাজের একটি একক। অন্য সমাজের থেকে দেখলে, আমার আর ধর্মঘট প্রিয় বাঙ্গালীর মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। কিন্তূ আমার পরিচিতির মধ্যে অন্তত পক্ষে দশ শতাংশের বেসি সক্রিয় ভাবে স্বপ্ন পুরণের লক্ষে গ্লোবাল বাঙ্গালী। যারা সকলেই হাবে ভাবে এবং পোশাকে স্টাইলে একশ ভাগ গ্লোবাল। দৃষ্টিভঙ্গির দিকদিয়ে এখনো খাঁটি সনাতন বঙ্গ সন্তান।
“আরে দাদা, বাঙ্গালী বলে গালি দিচ্ছেন নাকি?” প্রশ্ন জাগতেই পারে আপনার মনে। আমি বলবো “আত্ম সমালচনা করছি”।
হাঁ, যা বলছিলাম- আমি নিজেই যখন দোষী। দোষ কাটানোর দায়িত্ব আমার নিজের। সফলতার লক্ষ্যে নিজেকে টাঙ্গা টানা ঘোড়ার থেকে রেসের ঘোড়ায় উত্তরণের চেষ্টা। কসমোপোলিটান এবং কর্পরেট দুনিয়ার সান্নীদ্ধ্যে বেড়েওঠা নিতান্ত্য ঊচ্চাকাংক্ষী আরেকজন গ্লোবাল মানুষের থেকে আলাদা, সাধারণ শহুরে আর গ্রাম বাংলার উচ্চাকাংক্ষি উদ্দ্যোগীরা। ছোটো শহর গুলিতে গ্লোবাল লোকাল হয়ে ওঠার পালা শুরু করেছে জীবিকার সন্ধানীরা। আমাদের এখনো অনেকটা পথ পারিদিতে হবে সকলে মিলে। নিজের উন্নতিতে মন লাগালে, সমাজের ক্ষতি হবেনা।
রাজনীতি বুঝিনা, ক্লাব আড্ডা সমলোচনার উঠানেই পা রাখিনা, সমাজ সুধরাতে ভাষণেও মন নেই আমাদের। আমরা সুধু নিজেরটা বুঝি। চেষ্টার বিকল্প নেই বলেই আমাদের বিস্বাশ। নিজের ভালো যে বোঝেনা সে কি করে সবার ভালোটা বুঝবে? সবাই যদি নিজের মতন উন্নতির দিকে যায়, তাহলে সামগ্রিক উন্নতি হতে বাধ্য। কিন্তু তার বদলে আমরা সামগ্রিক উন্নয়নের দিকে মনযোগ দিয়েছি বিগত অর্ধশতক ধরে। ব্যাক্তিগত উন্নয়নের কথা বলামানে স্বার্থপর হওয়া, এই আমাদের সামাজিক বোধ। যারা উন্নয়নের সামাজিক রুপে বিস্বাশি তারা কিন্তু ব্যাক্তিগত ভাবে উন্নিত এবং সফলতার নিদর্শন। কি ভাবে সম্ভব তার বিচার আপনি করুন।
জীবনটাকে উজাড় করেদিয়ে, চাহিদা পুরণের স্বপ্ন অথবা স্বপ্ন পুরণের চাহিদা- কর্মক্ষমতাকে ভুলিয়ে দিতেপারে গ্লোবাল কালচার। সততার সাথে নিজের গুনের মূল্যায়ন ভারসাম্য এনেদিতেপারে ক্ষমতা, চাহিদা এবং স্বপ্নের মধ্যে। সেক্ষেত্রে উচ্চাসার মৃত্যু হতেপারে। গ্লোবাল অপ-কালচার আত্মিকরণে লোকাল ক্ষতি ছারা কিছু হয়না। জীবনের লক্ষ্য স্থিরতা পায় তাৎক্ষনিক ভাবে। উদ্দেস্য পূরণের ক্ষনে নতুন লক্ষের সৃষ্টিই কর্মক্ষমতাকে চ্যালেঞ্জ করার জন্য। দক্ষতার সাথে নিজের ভবিষ্যতের পরিকল্পনার জন্য চাই নিজের প্রতি বিস্বাশ, ক্ষমতার মূল্যায়ন, স্বপ্নের প্রতি আনুগত্য, ছাত্র সুলভ মনভাব, বাধা বিপত্তির সম্পর্কে ধারণা এবং ভারসাম্য। সমষ্ঠিগত ভাবে সমস্ত গুন বাঙ্গালীর আছে। নেই কর্মের অধীকারের বোধ। স্বাধীন সার্বিক শৃজনশীলতার অভাবের কারন কিন্তু আমরা সবাই।
আসুন আজ আমরা একক ভাবে নিজের কাজে ব্রতী হই। এখনো সময় আছে, এবার আমাদের ভেতরের অসুখ সারাই। সময়ের সাথে লড়াই করার জন্য প্রয়োজন মনের জোড় আর শারীরিক সক্ষমতা। শরীর সুস্থ সবল রাখাটা ব্যাক্তিগত অভ্যাসের সাথে যুক্ত হতেপারে। প্রতিদিন একটি লক্ষের দিকে মনে প্রানে এগিয়ে চলার জন্য চাই সুদৃর চেতনা। চেতনায় উচ্চারিত শব্দ গুলি গেথে বসে মনের গভীরে, আর্ধ-চেতনায়, হয়তো আরো গভীরে আব-চেতনায়। এবার দৌড়ের পালা। একছুটে লক্ষের দিকে।